বিজনেস টিপস

সফল উদ্যোক্তা হওয়ার মূলমন্ত্র

আপনি কি জানতে চান উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় ? কেননা একটি ব্যবসায় সফল হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে  সফল উদ্যোক্তা হওয়া। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই সফল উদ্যোক্তা হতে পারে না । যার ফলে ব্যবসায় সফল হতে  হতে পারেনা। আজ আমি এমন কিছু উদ্যোক্তা হওয়ার  উপায়  বলবো ফলে একজন সাধারন মানুষ সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠবে।

আর্টিকেলটিতে যা যা থাকছে

সফল উদ্যোক্তা হওয়ার উপায়  

১. প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে

অর্থাৎ রূপকথার আলাদিনের চেরাগের মত কোন কিছুই এমনি এমনি আসবে না বরং প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে।

আমরা যে বড় বড় ব্যক্তিকে দেখতে পাই অথবা সফলতম কোন মানুষকে দেখতে পাই।শুধু তাদের সফলতাকে দেখতে পাই কিন্তু তাদের পরিশ্রমকে দেখিনা।
তাদের সফলতার পিছনে কত রাতের যে পরিশ্রম রয়েছে সেটা আমরা বুঝার চেষ্টা করি না অথবা জানার চেষ্টাও করি না। সফলতা এমনি এমনি আসবে না বরং প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে।
বিশেষ করে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে গেলে আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে। পাশাপাশি ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
অর্থাৎ বিভিন্ন বিপদ- আপদের সময় আপনাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং ঐ বিপদ-আপদ কে হিম্মতের সাথে দূর করতে হবে। তাহলে সফলতা  একদিন আপনার  কাছে ধরা দিবেই।

২. উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় হলো  জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা

অর্থাৎ আপনি  যে ব্যবসায়িই করেন না কেন সে ব্যবসা সম্পর্কে খুঁটিনাটি থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপনার জানা থাকতে হবে। অর্থাৎ সে ব্যবসা সম্পর্কে আপনার জ্ঞান ও দক্ষতা লাভ করতে হবে। ওই ব্যবসা সম্পর্কে আপনার যেন পরিপূর্ণ অভিজ্ঞতা থাকে। যেন কোনো কমতি না থাকে।

তাহলে ব্যবসায় অসফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। অর্থাৎ এমন অভিজ্ঞতা থাকতে হবে যাতে করে আপনি যেকোনো পরিস্থিতিতেই সামাল দিতে পারেন।
প্রয়োজন হলে আপনি যে ব্যবসা করতে চাচ্ছেন সে ব্যবসা সম্পর্কে অভিজ্ঞদের কাছে ভালোভাবে শিখুন। দরকার হলে সে সেক্টরে আগে কাজ করুন।

অথবা সে ব্যবসা সম্পর্কে জানার জন্য কোর্সে ভর্তি হন। কেননা একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য এই বিষয়টা অনেক জরুরী। অতএব আপনাকে এই উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় আপনাকে অবশ্যই ফলো করতে হবে। তাহলেই আপনি সফল হবেন।

৩.  সফল উদ্যোক্তা হওয়ার মূলমন্ত্র  হলো পরিকল্পনা করা

অর্থাৎ আজ অধিকাংশ মানুষের ব্যবসায় অসফল হওয়ার কারণ হচ্ছে পরিকল্পনার অভাব। তারা দিনের পর দিন ব্যবসা করছেন কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই।
যার ফলে সফল হতে পারেনা। তাই আপনাকে ব্যবসা করার শুরুতেই পরিকল্পনা করতে হবে।

অর্থাৎ কি ব্যবসা করবেন ? কিভাবে ব্যবসা করবেন ? ক্রেতা কারা হবে ?  কী কী কৌশল অবলম্বন করবেন ?  ইত্যাদি নানান বিষয়ে আপনাকে পরিকল্পনা করতে হবে।

৪. নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ হলো ব্যবসার জন্য ঝুঁকি নিতে হবে

অর্থাৎ একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় হল যদি আপনি ব্যবসায় সফল হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ব্যবসার জন্য ঝুঁকি নিতে হবে।

তবে ভেবে চিন্তে ঝুঁকি নিতে হবে। চিন্তা ভাবনার ছাড়া অথবা পরিকল্পনা ছাড়া ঝুঁকি নেওয়া যাবে না তাহলে ব্যবসায় লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। অতএব আপনাকে চিন্তা ভাবনা করে ঝুঁকি নিতে হবে।
আর বুদ্ধিমানের কাজ তখনই হবে যখন দেখবেন লাভের পরিমাণ বেশি । ঝুঁকির পরিমাণ কম। ঠিক  তখনই ঝুঁকি নেবেন।

৫. কৌশলী হওয়া

অর্থাৎ  আপনাকে অবশ্যই কৌশলী হতে হবে। কেননা বর্তমান সময় প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসা। প্রচুর প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে। এই সময় যদি আপনি কৌশলী না হন।

তাহলে ব্যবসায় অসফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে । তাই আপনাকে কৌশলী হতে হবে অর্থাৎ ক্রেতাদের অবস্থা অনুযায়ী ব্যবসা করতে হবে।বাজারে যখন যে পণ্যের চাহিদা রয়েছে সে পণ্য নিয়ে  ব্যবসা করতে হবে।
আপনার প্রতিদ্বন্দ্বিরা কিভাবে ব্যবসা করছে সেগুলো ফলো করতে হবে। ইত্যাদি এসব নানান বিষয় লক্ষ্য করে কৌশল অবলম্বন করতে হবে। তাহলে আপনি একজন সফল  উদ্যোক্তা হতে পারবেন।

৬. নিজেকে চ্যালেঞ্জ করতে শিখুন এটা উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ

অর্থাৎ একজন  সফল উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় হল : আপনি আপনার নিজেকে চ্যালেঞ্জ করুন। যার ফলে আপনার কাজের স্প্রিট বাড়বে।

পাশাপাশি আপনি যেকোন নতুন হোক অথবা কঠিন কাজ হোক খুব অনায়েসেই করতে পারবেন। আর নিজেকে চ্যালেঞ্জ করার ফলে ব্যবসায় দ্রুত সফলতা লাভ করতে পারবেন।

৭. সম্পর্ক স্থাপন করুন

অর্থাৎ আপনার অংশীদার , বন্ধু  , নানান বিক্রেতাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করুন। এতে করে আপনার ব্যবসায় কোনো সমস্যা হলে তারা  ভুলগুলো ধরিয়ে দেবে এবং তারা আপনার সহযোগিতা করবে। ফলে আপনি দ্রুত সফলতা লাভ করতে পারবেন।

 ৮. নতুনত্ব আনুন নিজের মাঝে এবং ব্যবসার মাঝে

অর্থাৎ নিজেকে সময়ের সাথে পরিবর্তন করুন। পাশাপাশি ব্যবসার মধ্যে পুরাতন কৌশলগুলো বাদ দিয়ে নতুন নতুন কৌশল প্রয়োগ করার চেষ্টা করুন। এর মাধ্যমে আপনি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারবেন। আর যদি পুরাতন কৌশলগুলো ধরে রাখেন তাহলে ব্যবসায় লস হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। অতএব আপনাকে যুগের চাহিদা অনুযায়ী চলার চেষ্টা করতে হবে।

৯. আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখুন

অর্থাৎ আপনার ব্যবসায় প্রত্যেকটি আয় এবং ব্যয়ের হিসাব রাখুন এবং যে সমস্ত জায়গায়  অতিরিক্ত ব্যয় হয় কোন প্রয়োজন ছাড়া ঐ সমস্ত ব্যয় কে বন্ধ করুন। এর দ্বারা আপনার ব্যবসা ধীরে ধীরে উন্নতি লাভ করবে। আর এই হিসাব রাখার দ্বারা আপনার ব্যবসায় কতটুকু লাভ হচ্ছে কতটুকু ক্ষতি হচ্ছে এই সমস্ত বিষয়ে আপনার জানা থাকবে। ফলে এর প্রেক্ষিতে আপনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারবেন।

১০. গ্রাহকদের সাথে ভালো ব্যবহার

আপনি যদি সফল উদ্যোক্তা হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার গ্রাহকদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হবে তাদের বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য করতে হবে।

গ্রাহকদের সাথে একটি সম্পর্ক স্থাপন করুন। তাহলেই  আপনি সফল হতে পারবেন খুব দ্রুত।

১১. উপযুক্ত ব্যবসা বাছাই করুন

এমন একটি ব্যবসাকে নিজের জন্য বাছাই করুন যে ব্যবসাটা আপনার জন্য করা  সহজ হবে।  কোন বিরক্তি লাগবে না।

কেননা যদি বিরক্তি লাগে তাহলে কিছুদিন পর আর ওই ব্যবসার প্রতি আগ্রহ থাকবে না ফলে ব্যবসার মধ্যে অসফলতার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো : ব্যবসা বাছাই করার ক্ষেত্রে মানুষের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।

১২. ব্যর্থতার জন্য প্রস্তুত থাকুন

অর্থাৎ একটি ব্যবসার মধ্যে সফলতা ও ব্যর্থতা দোনো টাই থাকে। আপনার ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা আসতেই পারে। এই ব্যর্থতাকে মেনে নিয়ে আপনাকে সামনের দিকে এগিয়ে চলতে হবে।

ব্যর্থতা থেকে আপনাকে সঠিক শিক্ষা নিতে হবে। যেমন একটি শিশু হাঁটা শিখার সময় বার বার পরে যায় তারপর ধীরে ধীরে হাঁটা শেখে।

ঠিক তেমনিভাবে আপনাকে ব্যর্থতাকে মেনে নিয়ে এবং এই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই সফলতা আসবে।

১৩. উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় হলো ভয়কে জয় করা 

অবশ্যই ভয়কে জয় করতে হবে। কেননা ভয় সাফল্যকে দূর করে দেয়। অর্থাৎ কোন একটি কাজ করতে গেলে সেখানে ভয় পেলে কাজের গতিকে কমিয়ে দেয়।

ফলে সফলতা থেকে অনেক দূরে চলে যেতে হয়। অতএব আপনাকে অবশ্যই প্রত্যেকটি কাজ চাই সেটা সহজ হোক অথবা রিস্কি তথা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হোক এগুলোর ক্ষেত্রে ভয়কে এড়িয়ে চলতে হবে।
নিজের উপর আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে যে আমি অবশ্যই পারবো। তাহলে আপনি অবশ্যই দ্রুত সফলতা লাভ করতে পারবেন।

১৪. টিম তৈরি করা ও মেনেজ করা শিখতে হবে

অর্থাৎ ব্যবসা শুরু করার আগেই একটি ভালো টিম তৈরি করতে হবে পাশাপাশি তা ম্যানেজ করার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।

কেননা ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য কোন কোন সময় একটি টিমের প্রয়োজন পড়ে। তাই আপনাকে টিম তৈরি করা এবং ম্যানেজ করার দক্ষতা অর্জন করতে হবে ব্যবসায় সফলতা লাভ করার জন্য।

১৫. প্রচুর সময় দেওয়া হলো  উদ্যোক্তা হওয়ার উপায়

যারাই বর্তমানে সফলতা অর্জন করেছেন তাদের জীবনীতে দেখতে পারবেন তারা কত সময় ব্যয় করেছে এই ব্যবসার জন্য।

এটা বলার উদ্দেশ্য হল আপনাকে অবশ্যই একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য সময় দিতে হবে। সময়টা দিতে হবে ধারাবাহিকভাবে। তাহলে দেখবেন সফলতা আপনার কাছে ধরা দিবে।

১৬. নেটওয়ার্ক তৈরি করা 

নেটওয়ার্ক মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনার নেটওয়ার্ক যত ভালো হবে মার্কেটিং তত সহজ হবে । এবং খুব সহজেই মার্কেটিং এ সফলতা লাভ করতে পারবেন  ফলে আপনি একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠবেন। ইচ্ছা করলে আপনি ফেসবুক , ইউটিউব ইত্যাদির মাধ্যমে নেটওয়ার্ক তৈরী করতে পারেন ।

১৭. লক্ষ স্থির করা উদ্যোক্তা হওয়ার উপায়

সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য শুরুতে আপনাকে অবশ্যই লক্ষ্য স্থির করতে হবে। এটা প্রতিটা ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শুধু লক্ষ্য স্থির করলেই হবেনা বরং লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। অর্থাৎ আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য যত ধরনের কষ্ট হোক তা মেনে নিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তাহলে সফলতা আপনার কাছে ধরা দিবে।

পরিশেষে বলব : উপরে উল্লেখিত উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় সম্পর্কে যা আলোচনা করা হলো এগুলো হলো নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ 
অতএব যদি উপরের বিষয়গুলো আপনি ফলো করেন তাহলে আপনি সফল উদ্যোক্তা হবেনই ।

উদ্যোক্তা হতে হলে কি করবেন ?

আপনাকে অবশ্যই কয়েকটি কাজ করতে হবে সফল উদ্যোক্তা হতে গেলে ।
১/পরিকল্পনা করা।
২/ ব্যবসা সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে জ্ঞান থাকা।
৩/প্রচুর পরিমাণে পরিশ্রম করা।
৪/ কৌশল অবলম্বন করা।
৫/ ব্যবসার মাঝে নতুনত্ব আনা।
৬/ আয় ব্যয়ের হিসাব রাখা।
যদি এ গুলো ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!