ফেসবুক মার্কেটিং কি? কিভাবে ফেসবুক মার্কেটিং শুরু করবেন?
আসসালামু আলাইকুম ,
বন্ধুরা! স্বাগতম আপনাদের আজকের নতুন আর্টিকেলে। আজকের আর্টিকেল এ আমরা আলোচনা করব ফেসবুক মার্কেটিং ( Facebook Marketing) কি এবং কিভাবে ফেসবুক মার্কেটিং করবেন।
বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে যোগাযোগ ব্যবস্থার একটি অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো। যেমন- ফেসবুক (Facebook) , টুইটার(Twitter) , ইন্সাটাগ্রাম(Instagram) ইত্যাদি। তবে পুরো বিশ্বে বর্তমানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে ফেসবুক ( Facebook)। সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত একটি জরিপ অনুযায়ী সারা বিশ্বে মোট সক্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১.৫ বিলিয়নের উপরে এবং বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই এর ব্যবহারকারী রয়েছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর মতো সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশেও ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৪ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে এবং প্রতিনিয়ত এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া একটি জরিপ অনুযায়ী প্রতিদিন একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী গড়ে ৩০ মিনিট সময় ফেসবুকে ব্যয় করে থাকেন।
তবে আজকাল কেবলমাত্র ব্যক্তিগত কারণে ফেসবুক ব্যবহৃত হয় না। তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর এ যুগে ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ফেসবুকের ভূমিকা অনন্য। ছোট কিংবা বড় সব ধরণের ব্যবসায় পণ্য বিপণন বা মার্কেটিং এর জন্য ফেসবুক মার্কেটিং (Facebook Marketing) অত্যন্ত জনপ্রিয় ও ফলপ্রসূ একটি মাধ্যম।
তাই যে সকল ব্যবসায়ী বন্ধুরা ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্যবসায় পরিবর্তন আনতে চান কিন্তু সঠিকভাবে ফেসবুক মার্কেটিং কি তা জানেন না এবং কীভাবে ফেসবুক মার্কেটিং করবেন সে ব্যাপারে সন্দিহান আজকের এই আর্টিকেলটি তাদের জন্য।
বন্ধুরা! ফেসবুক মার্কেটিং কি এ ব্যাপারে জানার পূর্বে আমাদের জেনে নিতে হবে মার্কেটিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে কি বুঝায়। এই দুটো বিষয় বুঝতে পারলে আমরা খুব সহজেই ফেসবুক মার্কেটিং কি তা বুঝে যাবো। তো চলুন জেনে নেই মার্কেটিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং কি ।
মার্কেটিং কী ?
সাধারণত যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বিক্রি , পণ্যের প্রচার-প্রসার ও ভ্যালু বাড়ানোর উদ্দেশ্যে যে সকল বিজ্ঞাপণ ও প্রাচার প্রচারণা ঘটায় তাকে পণ্যের বিপণন বা মার্কেটিং বলা হয়। একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের মূলমন্ত্র হলো পণ্যের মার্কেটিং(Marketing)। কেননা মার্কেটিং ব্যতীত কোন পণ্য মানুষের নিকট পরিচিতি লাভ করতে পারে না এবং ক্রেতাগণ পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। তাই বহু আগে থেকেই মানুষ বিভিন্ন উপায়ে পণ্যের মার্কেটিং শুরু করে এবং এর ধারা এখন পর্যন্ত বর্তমান।
ডিজিটাল মার্কেটিং কী?
যেহেতু ব্যবসায় সাফল্য অর্জনে পণ্যের মার্কেটিং এর কোনো বিকল্প নেই তাই প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ বিভিন্ন পন্থায় মার্কেটিং শুরু করে। কিন্তু কালের আবর্তে মানুষের জীবনযাত্রায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। মার্কেটিং এর ব্যাপারে এর প্রভাব লক্ষণীয়। একসময় মানুষ পায়ে হেঁটে বাড়ি বাড়ি যেয়ে পণ্যের প্রচার করতো। এরপর রেডিও টেলিভিশন আবিষ্কারের পর বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে মার্কেটিং করা হতো।
তবে মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সবথেকে বড় পরিবর্তনটি ঘটেছে ইন্টারনেট আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে। বিভিন্ন উপায়ে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে মানুষ পণ্যের মার্কেটিং শুরু করে। ইন্টারনেটের সাহায্যে মার্কেটিং এর এ ব্যবস্থাকে বলা হয় ডিজিটাল মার্কেটিং(Digital Marketing)।
ফেসবুক মার্কেটিং কী?
বন্ধুরা! ইতিমধ্যে আমরা মার্কেটিং ও ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে খুব ভালোভাবেই জেনে গিয়েছি। তাই আশা করছি ফেসবুক মার্কেটিং( Facebook Marketing) সম্বন্ধেও কিছুটা ধারণা পেয়ে থাকবেন। সহজ কথায় ফেসবুকের সাহায্যে মার্কেটিং করার প্রক্রিয়াই হলো ফেসবুক মার্কেটিং(Facebook Marketing)। সাম্প্রতিক সময়ে অতি উচ্চহারে ফেসবুকের ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীদের নিকট ফেসবুক মার্কেটিং একটি কার্যকর পন্থা হিসেবে পরিচিত।
ফেসবুক মার্কেটিং কত প্রকার ও কি কি ?
প্রধানত ফেসবুক মার্কেটিং দুই ধরনের। অর্থাৎ আপনি দুটি উপায়ে ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারবেন। প্রথমটি হলো ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এবং দ্বিতীয়টি হলো পেইড ফেসবুক মার্কেটিং।
তাহলে চলুন এবার জেনে নেই ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এবং পেইড ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে।
১. ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং:
আপনার ব্যবসার আকার যদি ছোট হয়ে থাকে এবং বিনা খরচে মার্কেটিং করতে চান তাহলে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং আপনার জন্য সর্বোত্তম পন্থা।
ফেসবুকে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে একটি বিজনেস পেজ (Page) ওপেন করে তাতে আপনার পণ্যের প্রচার করে ফ্রিতে মার্কেটিং করতে পারবেন। আপনার পেজে যত বেশি ফলোয়ার থাকবে পণ্যের প্রচার তত বেশি হবে। তাছাড়া ফেসবুকের বিভিন্ন বাণিজ্যিক গ্রুপগুলোতে যুক্ত হয়ে ফ্রিতে আপনি আপনার পণ্যের মার্কেটিং করতে পারেন। এমনকি আপনি আপনার ফেসবুক প্রোফাইল ও মেসেঞ্জার এর সাহায্যে ফেসবুক মার্কেটিং করে পণ্যের মার্কেটিং খুব সহজেই করতে পারবেন।
২. পেইড ফেসবুক মার্কেটিং:
এ ধরনের ফেসবুক মার্কেটিং মূলত বড় বাজেটের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো করে থাকে। কেননা এক্ষেত্রে আপনার টাকা খরচ হবে। কারণ টাকার বিনিময়ে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে মার্কেটিং করার প্রক্রিয়াই হলো পেইড ফেসবুক মার্কেটিং। এর জন্য আপনার একটি ফেসবুক পেজ থাকতে হবে। এরপর পেজে আপনার কোম্পানির পণ্য বিস্তারিত বিবরণ সংযোজন করে পেইড ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারবেন।
ফেসবুক মার্কেটিং কেন করবেন?
আমরা সকলেই জানি যে ব্যবসাকে লাভজনক করতে হলে পণ্যের মার্কেটিং এর কোনো বিকল্প নেই। আর বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে ডিজিটাল মার্কেটিং(Digital Marketing) এর চেয়ে সহজ ও সেইসাথে কার্যকর কোনো উপায় নেই। তাছাড়া সাম্প্রতিককালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক এর জনপ্রিয়তা আকাশ ছোঁয়া। যার ফলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ফেসবুক মার্কেটিং অত্যন্ত ফলপ্রসূ উপায়।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৪ কোটির উপরে ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছেন। যারা প্রতিদিন গড়ে ৩০ মিনিট সময় ফেসবুকে ব্যয় করেন। সেই হিসেবে দেশের চার কোটি মানুষের নিকট আপনার পণ্যের প্রচার ঘটাতে ফেসবুক মার্কেটিং এর চেয়ে সহজ কোনো মাধ্যম হতেই পারেনা। কেননা আপনি ঘরে বসেই কোনো প্রকার টাকা খরচ না করে পণ্যের মার্কেটিং করতে পারবেন।
তাছাড়া ফেসবুক মার্কেটিং এর আরও অনেক ইতিবাচক দিক রয়েছে। যেমন-
- ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সহজেই অল্প সময় ও স্বল্প খরচে অধিক মানুষের নিকট পণ্য বিপণনের সুযোগ।
- নিজের অবস্থান ও ইচ্ছে অনুযায়ী ফ্রি কিংবা পেইড ফেসবুক মার্কেটিং এর সুবিধা গ্রহণ।
- মার্কেটিং এর পাশাপাশি অনলাইনে পণ্য বিক্রির সুযোগ সৃষ্টি।
- সকল শ্রেণী পেশার ও বয়সের মানুষের নিকট পণ্যের প্রচার ঘটানো।
বন্ধুরা এবার জেনে নেয়া যাক ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এবং পেইড ফেসবুক মার্কেটিং এর সুবিধাগুলো কি কি।
ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এর সুবিধা সমূহ:
- যেকোনো প্রকার ছোট-খাটো ও স্বল্প বাজেটের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিনা খরচে মার্কেটিং এর ব্যবস্থা।
- নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিনা খরচে পণ্য বিপণন ও বিক্রির সুযোগ।
- কোন প্রকার টাকা খরচ ছাড়াই দেশের চার কোটি মানুষের নিকট পণ্য পৌঁছে দেওয়া সুযোগ সৃষ্টি।
পেইড ফেসবুক মার্কেটিং এর সুবিধা সমূহ:
- স্বল্প খরচে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে অনেক বড় পরিসরে মার্কেটিং করা সম্ভব হয়।
- পণ্যের চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট বয়সের মানুষদের টার্গেট করে মার্কেটিং করা যায়।
- সুনির্দিষ্ট কোনো এড়িয়া শহর বা লোকালয় কে টার্গেট করে মার্কেটিং করা সম্ভব হয়।
- খুব সহজেই কাঙ্ক্ষিত গ্রাহকের নিকট পণ্য পৌঁছানো যায় বলে খরচও অনেক কমে যায়।
- ফেসবুকে অসংখ্য মানুষের উপস্থিতির কারণে ঘরে বসে তাদের সকলের নিকট পণ্যের পরিচিতি পৌঁছে দেয়া সম্ভব।
- বড় পরিসরে গঠিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য পেইড ফেসবুক মার্কেটিং একটি লাভজনক পন্থা।
ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করবেন?
বন্ধুরা! আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে প্রধানত দুই ভাবে আমরা ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারি। এগুলো হলো ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এবং পেইড ফেসবুক মার্কেটিং।
তবে ফেসবুক মার্কেটিং শুরু করার পূর্বে কয়েকটি বিষয়ে খুবই সচেতন থাকতে হবে। যেমন- সর্বপ্রথম আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনি যেসকল প্রোডাক্ট সেল করার কথা ভাবছেন সেগুলোর জন্য পর্যাপ্ত গ্রহক যেন ফেসবুকে থাকে। যেমন হতে পারে আপনার শাড়ির বিজনেস রয়েছে। তো অবশ্যই ফেসবুকে শাড়ি ক্রয় করার মত গ্রাহক রয়েছে। কেননা বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ফেসবুকের সক্রিয় ব্যবহারকারী। সুতরাং আপনি অনায়াসে ফেসবুকে শাড়ির মার্কেটিং করতে পারেন। কিন্তু যদি এমন হয় আপনি যে প্রোডাক্ট সেল করতে চাচ্ছেন তার জন্য পর্যাপ্ত গ্রাহক ফেসবুকে নেই তাহলে আপনাকে হতাশ হতে হবে। তাই প্রথমে আপনাকে গ্রাহকের চাহিদার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।
এখন চলুন জেনে নেই কিভাবে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং বা পেইড ফেসবুক মার্কেটিং করবেন।
যেভাবে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করবেন-
স্বল্প বাজেটের ব্যবসা বা ঘরোয়া উদ্যোক্তাদের পণ্যের মার্কেটিং এর জন্য ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং এর কোনো বিকল্প নেই। এর মাধ্যমে বিনা খরচে পণ্যের মার্কেটিং যেমন করা যায় তেমনি এর পদ্ধতিও অনেক সহজ ও সরল। সাধারণত দুটি উপায়ে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করা যায়। যেমন-
- ব্যক্তিগত পেজ তৈরি
- ফেসবুক গ্রুপে জয়েন
ফ্রিতে মার্কেটিং এর জন্য প্রথমত আপনি আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি নিজস্ব পেজ খুলে নিতে পারবেন যা সম্পূর্ণ ফ্রিতে করা যায়। এখানে আপনার পণ্য ও প্রতিষ্ঠান ও এর সার্ভিসের ব্যাপারে সম্পূর্ণ ডিটেইলস দেয়া থাকবে। যা দেখে একজন গ্রাহক সহজেই পণ্যের উপর ধারনা নিয়ে নিতে পারবে। এরপর নিয়মিত পেজে পণ্য সম্পর্কিত নানান পোস্ট দিতে হবে যা গ্রাহককে সহজেই আকৃষ্ট করতে পারে। এভাবে আপনার পেজে যত বেশি ফ্যান ফলেয়ার্স বাড়তে থাকবে আপনার পণ্যের মার্কেটিংও তত দ্রুত ছড়িয়ে পরবে।
তাছাড়া এখন ফেসবুকে অসংখ্য বাণিজ্যিক গ্রুপ রয়েছে। যেখানে মানুষ নিজেদের পণ্য কেনাবেচা করে থাকে। এ সমস্ত গ্রুপে মেম্বারশিপ গ্রহণের মাধ্যমে নিয়মিত পোস্ট করে ফ্রিতে পণ্যের মার্কেটিং করা যায় এবং সেই সাথে পণ্য বিক্রি করা যায়।
যেভাবে পেইড ফেসবুক মার্কেটিং করবেন-
টাকার বিনিময়ে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে মার্কেটিং করার প্রক্রিয়াকে পেইড ফেসবুক মার্কেটিং বলা হয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একটি ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থাকতে হবে। কেননা ফেসবুক পেজ ছাড়া শুধুমাত্র ফেসবুক প্রোফাইলের সাহায্যে ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দেয়া যায় না। তাই সর্বপ্রথম আপনাকে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি বিজনেস পেজ ওপেন করতে হবে। এরপর সেই পেজে আপনার পণ্য ও ব্যবসায়িক সেবা সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্যবহুল বিজ্ঞাপন প্রচার করতে হবে। এতে করে ঘরে বসেই খুব কম সময়ের মধ্যে আপনি আপনার প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং এর কাজ সেরে ফেলতে পারবেন। যাদের ব্যবসার পরিসর বড় বা ব্যবসার পরিসর বাড়াতে চান তাদের জন্য স্বল্প টাকা ব্যয়ে পেইড ফেসবুক মার্কেটিং অত্যন্ত ফলপ্রসূ। কেননা এর মাধ্যমে কম সময়ে অনেক দ্রুত এবং অনেক বড় পরিসরে পণ্যের মার্কেটিং করা যায়।
তাছাড়া ফেসবুক গ্রুপ তৈরির মাধ্যমেও একইভাবে ফেসবুক এডস বা বিজ্ঞাপন দেয়া যায়।
তো বন্ধুরা! এবার চলুন জেনে নেই কিভাবে ফেসবুক পেজ বা ফেসবুক গ্রুপ খুলবেন।
যেভাবে ফেসবুক পেজ খুলবেন-
ফেসবুক পেজ খুলতে হলে প্রথমে একটি ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি মানে একটি ফেসবুক প্রোফাইল থাকতে হবে। এখন যদি আপনার একটি ফেসবুক প্রোফাইল থেকে থাকে তবে নিম্নোক্ত ধাপগুলো ফলো(Follow) করে আপনি একটি ফেসবুক পেজ খুলে নিতে পারবেন।
ধাপ ১: প্রথমে আপনার প্রোফাইল থেকে ফেসবুকে লগইন (Log In) করুন। লগইন করার পর স্ক্রিনে একটি হোম পেজ (Home Page) আসবে।
ধাপ ২: এবার হোম পেজের ডান পাশে কোণায় অবস্থিত মেনু (Menu) বাটনে ক্লি. (Click) করুণ। ক্লিক করার পর নিচের ছবির মত একটি পেজ ওপেন হবে।
ধাপ ৩: এবার তৃতীয় ধাপে ছবিতে প্রদর্শিত pages অপশনে ক্লিক করুন।
ধাপ ৪: এরপর page information এর মধ্যে আপনার কোম্পানির নাম এবং অন্যান্য তথ্যগুলো দিয়ে ফিল আপ (Fill Up) করুন এবং আপনার কোম্পানির ক্যাটাগরি সিলেক্ট করুন।
ধাপ ৫: এবার create page বাটনে ক্লিক করলেই আপনার ফেসবুক বিজনেস পেজ তৈরি হয়ে যাবে।
তো বন্ধুরা! আশা করি উল্লিখিত ধাপগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করলে সহজে একটি ফেসবুক বিজনেস পেজ তৈরি করতে সক্ষম হবেন। এরপর পেজটিতে প্রফেশনাল লুক দিতে আপনার কোম্পানির একটি লোগো (Logo) তৈরি করুন এবং একটি সুন্দর ও সামঞ্জস্যপূর্ণ কভার (Cover) সেট করুন। এবার পেজটিকে আরও হেলদি (Healthy) করার জন্য about us অপশনে আপনার নাম , মোবাইল নাম্বার , ওয়েবসাইট লিংক ও অন্যান্য তথ্য দিয়ে পূরণ করুন। এখন নিয়মিতভাবে পেজে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে করে নিতে পারেন আপনার পেইড ফেসবুক মার্কেটিং।
এবার জেনে নেয়া যাক কিভাবে ফেসবুক এডস বা বিজ্ঞাপন দিবেন।
যেভাবে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিবেন-
আমি ইতিমধ্যে উল্লেখ করেছি যে ফেসবুকে এড বা বিজ্ঞাপন দিতে হলে টাকা খরচ করতে হবে। অর্থাৎ এটি হলো পণ্যের একটি পেইড প্রমোশন সিস্টেম। এখন আপনি মূলত দুটি উপায়ে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারেন। একটি হলো সরাসরি বুস্ট (Boost) করতে হবে এবং অন্যটি হলো এড ম্যানেজার (Ad Manager) এর মাধ্যমে।
যেভাবে সরাসরি বুস্ট করে এড দিবেন-
- সরাসরি বুস্ট করে এড দিতে হলে প্রথমে আপনাকে আপনার বিজনেস পেজে যেতে হবে।
- এরপর আপনার পোস্ট গুলোর নিচে যেখানে Boost Post লেখা আছে সেখানে ক্লিক করতে হবে।
- এবার আপনার টার্গেটেড কান্ট্রি বা টার্গেটেড লোকেশন বা টার্গেটেড এজ সিলেক্ট করতে হবে।
- এখন আপনি কত ডলার ব্যয়ে এড দিতে চান তা সিলেক্ট করে ক্রেডিট কার্ড বা পেপালে এড দিয়ে দিতে হবে। এরপর কানেক্ট বা বুস্ট পোস্ট বাটনে ক্লিক করলেই বিজ্ঞাপনটি চালু হয়ে যাবে।
যেভাবে এড ম্যানেজার এর মাধ্যমে এড দিবেন-
- প্রথমে আপনার প্রোফাইলে লগইন করে আপনার বিজনেস পেজে প্রবেশ করুন।
- এরপর Adcenter বাটনে ক্লিক করে All Ad থেকে Ad Manager এ প্রবেশ করুন।
- এখন Ad Manager এ ক্লিক করে সেখান থেকে আপনার প্রোফাইল সিলেক্ট করে Create বাটনে ক্লিক করে ক্যাম্পেইন তৈরি করুন।
- এরপর অবজেক্টিভ (Objective) থেকে ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে নেক্সট (Next) বাটনে ক্লিক করুন।
- এবার আপনার প্রোডাক্ট এর ছবি , লোকেশন এবং কাদের নিকট বিজ্ঞাপন শো করাতে চান তা দিয়ে সিলেক্ট করে দিন।
- এরপর ডলার সিলেক্ট করে ক্রেডিট কার্ড বা পেপাল এ এড দিয়ে পাবলিশ করলেই আপনার বিজ্ঞাপন চলতে শুরু করবে।
সুতরাং উপরোক্ত ধাপগুলো ফলো করে যে কেউ সহজে ফেসবুক এড বা বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে ফেসবুক পেইড মার্কেটিং করতে পারবে।
ইতিকথা:
বন্ধুরা! আশা করি ইতিমধ্যে প্রদত্ত আর্টিকেল এর মাধ্যমে ফেসবুক মার্কেটিং (Facebook Marketing) কি এবং ফেসবুক মার্কেটিং কিভাবে করবেন এ সংক্রান্ত সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছি। তো এবার ঘরে বসেই ফেসবুকের সাহায্যে প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং করতে পারবেন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন আপনার প্রোডাক্ট এর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্রাহক ফেসবুকে থাকে এবং এড ক্যাম্পেইন (Ad Campaign) করতে যেন ভুলবেন না। নতুবা আপনি আশানুরূপ ফলাফল পাবেন না।
ধন্যবাদ।
2 Comments